#গল্পঃ মা তাহলে কার
#পর্বঃ ১৬
স্যার কিছুক্ষণ রুমে হাটাহাটি করার পরে আমার পাশে বিছানায় শুয়ে পড়লো। আমি তখন এমন ভাব করে চোখ খুললাম, যে স্যার বিছানায় সোয়াতে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। আমি চোখ খুলে স্যারের দিকে তাকাতেই বলল,
- কি ঘুম ভাঙলো তাহলে?
আমি ঘুম ঘুম চোখে বললাম,
- হুম
স্যার বলল,
- তাহলে উঠো, তোমার মা গোসল করতে চলে গেছে। আমরা ঠান্ডায় ঠান্ডায় বাড়ি চলে যাব।
আমি আর কোন কিছু না বলে, বিছানায় উঠে বসলাম। মার বিছানার চাদর দেখলাম একটা জাগায় জরো করে রাখা। বিছানা থেকে নামতেই মা বাথরুম থেকে বের হয়ে এলো। মাকে দেখলাম বাড়ি থেকে পড়ে আসা কাপড় পড়তে। মা বাথরুম থেকে রুমে আসার সময় খেয়াল করলাম, মা কেমন খুড়িয়ে খুড়িয়ে হেটে আসতে।
প্রতিবারই পা পালার সাথে সাথে মার মুখে এক অদ্ভুত ব্যাথার চাপ প্রকাশ পাচ্ছিল। যেই কেউ দেখেই বুঝতে পারবে রাতে যে আচ্ছা মতো চো দ ন খাইছে। মা আমার দিকে তাকাতে অনেক লজ্জা পাচ্ছিল। আমি চুপচাপ গেঞ্জি আর প্যান্ট নিয়ে বাথরুমে চলে গেলাম।
বাথরুমে গোসল টোসল করে রেডি হয়ে বের হয়ে এলাম। মাকে আর স্যারকে দেখলাম দুই বিছানায় বসে কথা বলতে। আমাকে দেখেই কথা বলা বন্ধ করে দিল। তখন মা আমাকে বলল,
- বাবা তোমার সবকিছু নেওয়া হয়েছে কিনা দেখো তো? আমরা এখনই বের হয়ে যাব, বাহিরে নাস্তা করে পরে রওনা দেব বাড়ির দিকে।
আমি আশেপাশে একটু দেখে বললাম,
- হুম, সবকিছু নেওয়ার হয়ছে।
একটু পরে আমরা তিনজন রুম থেকে বাহির হয়ে নিচে কাউন্টারে গেলাম। স্যার টাকা পয়সার সকল লেনদেন পরিশোধ করে। আমাদের নিয়ে একটা হোটেলে গেল। সেখানে আমরা নান রুটি দিয়ে গরুর মাংস খেলাম। নাস্তা করার পরে মাকে দেখলাম একটা টেবলেট ব্যাগ থেকে বের করে খেতে।
আমি বুঝতে পারলাম, মা নো রি ক্স ইমারজেন্সি পি ল খাইছে। হোটেল থেকে বের হয়ে, আমরা বাসে উঠতে উঠতে ৯ টা বেজে গেল। মা আর আমি পাশাপাশি বাসলাম, স্যার আমাদের পিছনে সিটে বসলো। ৪/৫ ঘন্টার পথ, মা আর স্যার বাসে উঠেই ঘুমিয়ে গেলো।
পুরা রাস্তা মা আর স্যার ঘুমাইছে। ঘুম তো আসার এই কথা, দুই রাত ধরে তো আর তারা ঘুমাইছে না। বাস থামার পরে আমার ডাকে দুজনের ঘুম ভাঙছে। বাস স্ট্যান্ড থেকে একটা রিক্সা নিয়ে আমরা বাড়িতে চলে আসলাম। আমাদের বাড়িতে দিয়ে স্যার চলে গেলেন তার বাড়িতে।
দুপুরবেলা হওয়াই মা আমাকে কিছু বিস্কুট খেতে দিয়ে রান্না করতে চলে গেল। মা ঘরের কাজ করতে ব্যস্ত হয়ে গেল, আর আমি ব্যস্ত হয়ে গেলাস মার খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটা দেখাতে। মার রান্না হয়ে গেলে ভাত খেয়ে আমি প্রাইভেট পড়তে চলে গেলাম।
প্রতিদিন বিকালে আমি স্কুলের এক স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে যেতাম। প্রতিদিন বিকাল চারটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত প্রাইভেট পড়তাম। সেদিনও প্রতিদিনের মতো প্রাইভেট পড়তে চলে গেলাম আর মা বাসায় শুয়ে রেস্ট নিতে লাগলো।
রাতে বাবা বাড়ি এসে, মাকে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটতে দেখে জানতে চাইলো কি হয়ছে? এইভাবে হাঁটতাছে কেনো? মাকে দেখলাম খুব সুন্দরভাবে বাবাকে সামনে নিলো মিথ্যে বলে। বাবাকে বলল বাড়ি এসে কাজ করার সময় বাথরুমে পড়ে গেছে যার ফলে কোমরে ব্যাথা পাইছে।
রাতে আমরা সবাই একসাথে খাওয়া দাওয়া করে যে যার রুমে ঘুমাতে চলে গেল। আমাদের বাড়িটা ছিল হাফ বিল্ডিং চাইরটা রুমের। মার রুমের সাথে বাথরুম যোগ করা ছিল। বাড়ির বারান্দায় ছিল রান্নাঘর সাথে আর একটা বাথরুম। যেটা আমি সহ মেহমান আসলে ব্যবহার হতো।
মা-বাবার রুমটা ছিল ঘরের একদম শেষ মাথায়। তাদের রুমের সাথে ছিল আমার রুম। আমার রুমের সাথে ছিল একটা কি গেস্ট রুম তার সাথে দিলে একটা ফাঁকা রুম যেখানে বাড়ির সব পুরাতন জিনিসপত্র রাখা হতো। ফাঁকা রুমের সামনেই বারান্দার মাঝে ছিল আমাদের রান্নাঘর।
সেদিন আমরা আমাদের মতই রাতে ঘুমিয়ে গেলাম। রাতে মা আর বাবার কি কথা বললা তা জানিনা। সকালে ঘুম থেকে উঠে স্কুলে যাওয়ার জন্য রেডি হতেই, বাবা আমাকে বললো "আজ থেকে আর বিকালে প্রাইভেট পড়তে যেতে হবে না, কাল থেকে তোমার পলাশ স্যার তোমাকে বিকালে বাড়িতে পড়াতে আসবে।
বাবার কথা শুনেই আমি বুঝতে পারলাম, এটা মায়ের চালবাজি। মা-বাবাকে বোকা বানিয়ে পলাশ স্যারকে বাড়িতে আনতেছে চো দা নো র জন্য। পলাশ স্যার আসবে এতে আমিও অনেক খুশি। রেগুলার মা আর স্যারের চো দা চু দি দেখতে পাবো।
সেদিন স্কুল পড়ে সোজা বাড়িতে চলে আসলাম। বিকালে কোন প্রাইভেট না থাকায়, বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলতে চলে গেলাম মাঠে। মনে মনে আগামীকালের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। সন্ধ্যার দিকে পড়তে পড়তে খেয়াল করলাম, মা এখন আর খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটে না।
রাতে খাওয়া দাওয়া করে যে যার মত করে শুতে গেলাম। রাতে শুয়ে শুয়ে মাকে আর স্যারকে নিয়ে অনেক ভাবলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে স্কুলে চলে গেলাম, বাবাও দোকানে চলে গেল। আমার বাবার বাজারে একটা কাপড়ের ব্যবসা আছে। সেদিন স্কুলে যাওয়ার পর স্যারের সাথে দেখে।
স্যার আমাকে বলল, আজকে বিকাল থেকে পড়াতে আসবে। সারাদিন স্কুলের ক্লাস করে বিকালে বাড়ি গেলাম তখন তিনটা বাজে। বাড়ি গিয়ে গোসল করে খাওয়া দাওয়া করে একটু রেস্ট নিলাম। খেয়াল করলাম মা আজকে একটু সাজগোজ করছে। আর অনেক খুশি খুশি ভাব নিয়ে থাকলো।
বিকাল চারটার দিকে বাড়ির গেইটে কলিং বেলের শব্দ হলো। মা দ্রুত গিয়ে গেইট খুলে দিল। মাকে আর স্যারকে দেখলাম কথা বলতে বলতে ঘরের দিকে আসছে। মার সাথে ঘরে এসে আরও কিছুক্ষণ টুকটাক কথা বলে, আমাকে পড়াতে শুরু করলো। আর মা চলে গেল তার রুমে।
আমাকে স্যার অনেক সুন্দর করে বুঝিয়ে বুঝিয়ে ঘন্টা খানেক পড়িয়ে। কিছু প্রশ্ন মুখস্ত করতে দিয়ে স্যার বলল,
- এই পাঁচটা প্রশ্ন মুখস্ত করতে থাকো, আমি তোমার মার সাথে একটু কথা বলে আসি।
#চলবে

